হিমোগ্লোবিন কম হলে কি খাওয়া উচিত | কি খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ে - 2025
আজকের এই পোস্টে আমরা জানবো, হিমোগ্লোবিন কম হলে কি খাওয়া উচিত এই বিষয় সম্পর্কে। তাই আপনি যদি এই বিষয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী থাকেন তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন।
এছারাও এখানে - কি খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ে?, হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ?, হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিক কত? ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করা হবে।
হিমোগ্লোবিন (Hemoglobin) একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন যা আমাদের রক্তে অক্সিজেন পরিবহন করে। এটি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে অক্সিজেন পৌঁছাতে সাহায্য করে। যখন হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায়, তখন একে অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা বলা হয়, যা শরীরের শক্তির স্তর কমিয়ে দেয় এবং শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম হলে আমাদের খাওয়া-দাওয়ার দিকে বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন। এই ব্লগ পোস্টে আমরা জানব, হিমোগ্লোবিন কম হলে কোন ধরনের খাবার আমাদের খাওয়া উচিত।
হিমোগ্লোবিন কম হলে কি খাওয়া উচিত
হিমোগ্লোবিন কম হলে কি খাওয়া উচিত সেগুলি সম্পর্কে সকল তথ্য নিচে দেওয়া হল। দেখে নিন -১. আয়রন সমৃদ্ধ খাবার
হিমোগ্লোবিনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো আয়রন। আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে অনেকটা সহায়তা করে এবং রক্তের সেল গঠনে সাহায্য করে। তাই হিমোগ্লোবিন এর মাত্রা কম হলে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের উদাহরণ -
- সবুজ শাকসবজি যেমন - পালং শাক, ব্রকোলি, মটরশুঁটি, বিনস ইত্যাদি আয়রনের ভালো উৎস।
- এছারাও কুমড়োর বীজ, তিলের বীজ, কাজুবাদাম, চিনাবাদাম, মুগ ডাল ইত্যাদি আয়রনের ভালো উৎস।
- এর পাশাপাশি, লাল মাংস (গরুর মাংস, খাসির মাংস) ও লিভার এগুলিতেও প্রচুর আয়রন আছে।
২. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার:
ভিটামিন সি শরীরে আয়রন শোষণে সাহায্য করে। তাই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি।
- লেবু জাতীয় ফল - কমলা, লেবু, জাম্বুরা ইত্যাদি ভিটামিন সি এর ভালো উৎস।
- স্ট্রবেরি, পেয়ারা, আমলকি, পেঁপে, টমেটো, ব্রকোলি ইত্যাদি।
৩. ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার:
ফলিক অ্যাসিড লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে। তাই ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি।
- সবুজ শাকসবজি: পালং শাক, লেটুস পাতা ইত্যাদি ফলিক অ্যাসিডের ভালো উৎস।
- ডাল, মটরশুঁটি, বাদাম, অ্যাভোকাডো, কলা ইত্যাদি ফলিক অ্যাসিডের ভালো উৎস।
৪. ভিটামিন বি ১২ সমৃদ্ধ খাবার:
ভিটামিন বি ১২ লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে। তাই ভিটামিন বি ১২ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি।
- ডিম, দুধ, পনির, মাছ, মাংস ইত্যাদি ভিটামিন বি ১২ এর ভালো উৎস।
হিমোগ্লোবিন রিলেটেড প্রশ্ন উত্তর -
Q: হিমোগ্লোবিন কমে গেলে কি হয়?
Ans - হিমোগ্লোবিন কমে গেলে অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা হয়, যার ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না। এর ফলে দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, এবং ত্বক ফিকে বা ফ্যাকাশে হয়ে যেতে পারে। হিমোগ্লোবিন কমে গেলে দ্রুত চিকিৎসা নিলে উপসর্গগুলি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
Q: হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিক কত?
Ans - হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক পরিমাণ মানুষের বয়স এবং লিঙ্গের উপর নির্ভর করে। সাধারণত:
- পুরুষদের জন্য: ১৩.৮ - ১৭.২ গ্রাম/ডেসিলিটার
- মহিলাদের জন্য: ১২.১ - ১৫.১ গ্রাম/ডেসিলিটার
- বাচ্চাদের জন্য: ১১ - ১৬ গ্রাম/ডেসিলিটার
Q: হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ?
Ans - হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে, এর মধ্যে প্রধান কিছু হলো: আয়রনের অভাব, ভিটামিন B12, অল্প খাবার খাওয়া বা অপুষ্টি, রক্তক্ষরণ, বা অন্যান্য রোগ এর কারনে হিমোগ্লোবিন কম হয়ে যেতে পারে। হিমোগ্লোবিন কমে গেলে কি হয়
আসুন জেনে নেওয়া যাক যে হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে বা হিমোগ্লোবিন কমে গেলে কি হয় এই বিষয় সম্পর্কে।হিমোগ্লোবিন কম হলে, অর্থাৎ অ্যানিমিয়া হলে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
- দুর্বলতা এবং ক্লান্তি: শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছাতে না পারায় আপনি দ্রুত ক্লান্ত বোধ করবেন।
- মাথা ঘোরা বা ভারী অনুভূতি: অক্সিজেনের অভাবে মাথা ঘুরতে পারে বা ভারী অনুভূতি হতে পারে।
- শ্বাসকষ্ট: শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পৌঁছানোতে শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে।
- ত্বক ফ্যাকাশে বা হালকা হওয়া: হিমোগ্লোবিন কম হলে ত্বক রক্তহীন হয়ে পড়ে, যার ফলে ফ্যাকাশে দেখায়।
- হৃদস্পন্দন দ্রুত হওয়া: শরীরের অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণের জন্য হৃদস্পন্দন দ্রুত হতে পারে।
- হাত-পা শীতল হওয়া: রক্ত সঞ্চালন কম হওয়ার কারণে হাত-পা ঠান্ডা অনুভূত হতে পারে।
- মাথাব্যথা: অক্সিজেনের অভাবে মাথাব্যথা হতে পারে।
এছাড়া, কিছু মানুষে অন্যান্য উপসর্গ যেমন দৃষ্টিশক্তি অস্পষ্ট, ঠাণ্ডা পায়ের আঙ্গুল, বা প্রচন্ড ক্ষুধা অনুভব করতে পারে। যদি এই লক্ষণগুলি দেখা দেয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।